আন্তর্জাতিকসব খবর

ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ১১ লাখ কিউসেক পানি  ছাড়া হচ্ছে একদিনেই

ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ১১ লাখ কিউসেক পানি  ছাড়া হচ্ছে একদিনেই

ডেস্ক রিপোর্ট,

ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে একদিনেই ছাড়া হচ্ছে ১১ লাখ কিউসেক পানি। বাঁধ প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপক (জিডি) আর ডি দেশপান্ডে এ কথা জানিয়েছেন। শনিবার থেকে এই বাঁধের পানি ছাড়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন তো ব্যারেজের সব গেট খোলা আছে। আর পানি আটকে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। এটি নিয়ম অনুযায়ী ছাড়া হয়। বন্যার শঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ফারাক্কার পানি ছাড়ার কারণে যে বন্যা হচ্ছে বা হবে, এটি ঠিক নয়। ফারাক্কার পানি নিয়ম অনুযায়ী যতটুকু ছাড়ার কথা সে হিসেবে ছাড়া হচ্ছে।

প্রবল বৃষ্টি আর বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে পানি ছাড়ায় চাপ বাড়ছে ফারাক্কা ব্যারেজে। এতে করে এই ব্যারেজ থেকেও ছাড়তে হচ্ছে পানি। ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় দৈনন্দিন পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। যদিও বাকি সময়ে আপস্ট্রিমে পানি যেমন থাকে, সেই অনুযায়ী পানি ছাড়া হয় ডাউনস্ট্রিমে। দেশটির নদী গঙ্গার পানির স্তর বাড়তেই ১১ লাখ কিউসেক পানি  ছাড়া হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম কলকাতার নিউজ-১৮ বাংলার এক প্রতিবেদনে আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) এসব তথ্য জানানো হয়। ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পসূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল বৃষ্টি হওয়ায় এবং ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের জলস্তর বৃদ্ধিতে সমস্ত গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৭৭ দশমিক ৩৪ বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

 

ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পসূত্রে আরও বলা হয়েছে, ফারাক্কা ব্যারেজে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা নেই, ফলে পানি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে তারা। পানি না ছাড়া হলে ফারাক্কা ব্যারেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা।

এদিকে, এই পানি ছাড়ার ফলে বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে, দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে মুর্শিদাবাদের মানুষ। এ ছাড়া, গঙ্গার উৎপত্তির অঞ্চলগুলোতে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে থাকায় নদের জলস্তর।

 

কলকাতার নিউজ-১৮ বাংলার ভিডিও প্রতিবেদনের প্রতিবেদক কৌশিকের সঙ্গে কথা হয় ব্যারেজের মহাব্যবস্থাপক (জিডি) আর ডি দেশপান্ডের। তিনি বলেন, এখন তো ব্যারেজের সব গেট খোলা আছে।

 

‘এখন যে পানি ডাউনস্ট্রিমে যাচ্ছে, তাতে সেদিকে পানির প্রবাহ বাড়তে পারে কি না, প্রশ্নে দেশপাণ্ডে বলেন, না। গতকাল তো ১১ লাখ ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া ছিল। যা ওপর থেকে আসে, তা থেকে নির্দিষ্ট অংশ বাদ দিয়ে বাকি সব ডাউন স্ট্রিমে ছাড়া-ই লাগে। এটি ধরে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া ব্যারেজের কারণে আপস্ট্রিম বা ডাউনস্ট্রিমে জলাবদ্ধতার কোনো স্ট্যাডি আমাদের কাছে নেই। এটির কোনো কারণ নেই।

ফারাক্কা বাঁধে পানিধারণ ক্ষমতা ২৬ দশমিক ২৫ মিটার। বিপৎসীমা ২২ দশমিক ২৫ মিটার  এবং সতর্কতার সীমা ২১ দশমিক ২৫ মিটার। এরইমধ্যে আপস্ট্রিমের ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করায় শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ গেট। ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ায় নদীর পানি বেড়ে প্লাবনের পরিমাণ আরও বাড়ছে। নিমতিতায় সতর্কসীমা ২০ দশমিক ৫৮ মিটার। বিপৎসীমা ২১ দশমিক ৯০ মিটার। নিমতিতায় পানি বইছে ১১ দশমিক ৫১ মিটার উচ্চতায়।  নূরপুরে উচ্চতা ২১ দশমিক শুন্য তিন মিটার। সেখান পানি বইছে  ২১ দশমিক ৬৪ মিটার দিয়ে। সতর্কতাসীমা ২০ দশমিক ৭৩ মিটার।

 

গিনিয়ায় বিপৎসীমা ২০ দশমিক ৯৪ মিটার সেখানে ২১ দশমিক ৫৫ মিটার উচ্চতায় পানি বইছে। সতর্কতাসীমা ২০ দশমিক ৩৯  মিটার। জঙ্গিপুরে বিপৎসীমা ২০ দশমিক ২৯ মিটার সেখানে ২০ দশমিক ৮৭ মিটার উচ্চতায় পানি বইছে। সতর্কতাসীমা ১৭ দশমিক ৮০  মিটার। লালবাগ, বেলডাঙা, শক্তিপুর, ভাগীরথী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

এ বিষয়ে মহাব্যবস্থাপক দেশপাণ্ডে বলেন, ৪০ হাজার কিউসেক বাদে সব পানি নিচে ছাড়তেই হয়।  সে হিসেব ডিজাইজ ডিসচার্জ  ২৭ লাখ কিউসেক। এখন মাত্র ১১ লাখ ছাড়া হচ্ছে।

আরও দেখান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from দৈনিক বঙ্গভূমি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading