নাফিসা হোসেন মারওয়ার পরিবার ছিল অভাবের সাথে লড়াইয়ে আপ্রাণ সংগ্রামী। নাফিসা স্বপ্ন দেখেছিলেন পড়াশোনা শেষে প্রবাসী মা কুলসুম বেগমের পাশে দাঁড়িয়ে পরিবারের হাল ধরার। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেসে গেল একটি বুলেটের আঘাতে, যখন তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। সাভারের পাকিজা এলাকায় আন্দোলন চলাকালীন বুলেটের আঘাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নাফিসা।
গাজীপুরের দত্তপাড়ার সাহাজুদ্দিন সরকার স্কুল এন্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাফিসা ছিলেন সাহসী এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। মা প্রবাসে থাকায় বাবার সাথে গাজীপুরে বসবাস করতেন। এরপর সাভারের মামা হযরত আলীর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যান। ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন নাফিসা। তবে তার ফলাফল দেখার আগেই তিনি শহিদ হন।
নাফিসার বাবা আবুল হোসেন বলেছিলেন, “আমার মেয়ে ছিল সাহসী। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই সে ছিল রাজপথে। আমি নিষেধ করলেও সে নিজের লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ায়নি। ৫ আগস্ট আমাকে ফোন করে বলেছিল, ‘বাবা, আমি গুলি খেয়েছি, বোধহয় আর বাঁচবো না’। সেই ফোনই ছিল আমাদের শেষ কথা।”
মায়ের সাথে দীর্ঘদিনের বিরহে ছিলেন নাফিসা। তবে মেয়ে হারানোর শোকে কাতর হয়ে মা কুলসুম বেগম কুয়েত থেকে দেশে ফিরে আসেন। নাফিসার স্মৃতিচিহ্ন ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন তিনি।
নাফিসার মৃত্যুর পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি থেকে তার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার মৃত্যুর ঘটনায় নাফিসার বাবা আবুল হোসেন সাভার থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
নাফিসার সাহস ও আত্মত্যাগ এখনো পরিবারের সকলকে কাঁদায়।
Discover more from দৈনিক বঙ্গভূমি
Subscribe to get the latest posts sent to your email.