ডেস্ক রিপোর্ট
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চলমান রোহিঙ্গা সংকট ও বৈশ্বিক অভিবাসন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
আজ এখানে প্রাপ্ত এক বার্তায় জানানো হয়, মঙ্গলবার (নিউইয়র্ক সময়) মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপের সাথে বৈঠকে উপদেষ্টা হোসেন বাংলাদেশের ওপর চাপানো উল্লেখযোগ্য বোঝা হিসেবে রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ীতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে আলোচিত হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে সম্ভাব্য সমাধানের পথ খুঁজে বের করা এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনকভাবে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
বৈঠকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখা জরুরি, যাতে প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা যায়। উপদেষ্টা হোসেন জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যে, তারা রোহিঙ্গাদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় এক মিলিয়নেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে এসেছে, যাকে জাতিসংঘ "জাতিগত নির্মূলের প্রকৃষ্ট উদাহরণ" এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো "গণহত্যা" হিসেবে অভিহিত করেছে। গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাও তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত যেতে পারেনি। যদিও মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু নিরাপত্তা সংক্রান্ত আস্থার অভাবে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা দু’বার ব্যর্থ হয়েছে।
একই দিনে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপের সাথেও পৃথক বৈঠক করেন। এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুও ছিল রোহিঙ্গা সংকট। উভয় পক্ষই বাস্তুচ্যুত মানুষের সুরক্ষা, মঙ্গল এবং অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
পোপ বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন, যেটি গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন-এর চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কাজ করছে এবং নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও মানবিক অভিবাসন ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকটের কারণে সৃষ্ট অভিবাসন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রতি আইওএম-এর সমর্থনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।