বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসাব রক্ষক সাঈদ, ৪১ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা
ইন্দ্রজিৎ টিকাদার ,বটিয়াঘাটা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ
বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪১ লক্ষ টাকা নিয়ে লাপাত্তা একাউন্ট কাম হিসাব রক্ষক সাইদুজ্জামান ।
বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ সাইদুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ বাণিজ্য করে আসছিল । অনিয়মের পাল্লা ভারী হয়ে উঠলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এক পর্যায়ে মোসলেকা দিয়ে পুনরায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজে যোগদান করেন ।
তারপরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর ও বিল ভাউচার করে একের পর এক অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে চলছিল । গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক তাকে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করেন। পরের দিন তাকে কর্মস্থল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
একই দিনে অফিস সহকারী কাম হিসেবে মাহমুদকে দাযি়ত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২১ দিন অতিবাহিত হুলেও তিনি তার পূর্ব কর্মস্থলের দাযি়ত্ব হস্তান্তর না করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার ব্যবহৃত কক্ষে তালা মেরে অর্থ নিয়ে লাপাত্তা হয় ।
এমনকি বর্তমান কর্মস্থল ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদেননি । বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যাবতীয় মালামাল ক্রযে়র জন্য ৩৯ লাখ টাকার একটি চেক তার নিকট থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রযে়ছে। এছাড়া জানুয়ারি ও জুন মাসের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকল আয়ের ২ লাখ ২৫ হাজার টাকার সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষ । এছাড়া দপ্তরের যাবতীয় কাগজপত্র তার কক্ষেবন্দী রয়েছে। ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জেসমিন আরা বলেন দীর্ঘ ২১ দিনেও সাইদুজ্জামান ফুলতলায় যোগদান করেননি । এমনকি কোন কথাও বলেননি।
আমি বিষয়টি খুলনা সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি। বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য
– ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, বিভাগীয়-পরিচালক স্বাস্থ্য গত ২৯ শে জুলাই সাইদুজ্জামানকে বদলি করেন।তিনি এখনো কোন দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন । এপর্যন্ত তাকে বিভিন্ন বিষয়ে কারন দর্শানোর চিঠি দিলেও কোন চিঠি রিসিভ করেননি । তার নিকট বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৯ লাখ টাকার
একটি চেক তার নিকট রয়েছে । এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বিভিন্ন খাত থেকে আয়ের ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেননি । সেটাও তার হেফাজতে আছে । প্রধান সহকারি
সাইদুজ্জামান এর নিকট জানার জন্য একাধিকবার তার ব্যবহৃত ০১৬৭১১৫১৯৭৬ নাম্বারে ফোন করলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। পরে ফোনটি বন্ধ করে দেন। খুলনা জেলা সিভিল সার্জন (সি
এস) ডাক্তার শফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি বিভাগীয় পরিচালককে জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলেন। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মঞ্জুরুল মুর্শিদ বলেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উচিত ছিলো, চার্জ বুঝে নিয়ে তাকে রিলিজ দেওয়া। অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান যোগদানের পরে ওই হিসাব রক্ষক সাইদুজ্জামান বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র এবং বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নতুন যোগদান, ছুটি,বদলী, আউটসোর্সিং কর্মচারী,এমনকি অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ফাইল আটকিয়ে অর্থ আদায় করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ।